মুহাম্মাদ শামসুদদোহা তালুকদার : ইসলামী দলগুলোর দৃশ্যমান রোহিঙ্গাসহায়ক তৎপরতার অগ্রভাগে যাদেরকে দেখা যায়, তন্মধ্যে নিঃসন্দেহে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাদের এ পর্যন্ত ত্যাগ ও খিদমতের তুলনা হয়না।
ঈদের কয়েকদিন পূর্ব থেকে প্রথম পর্যায়ে দলটির যুগ্ম মহাসচিব, বর্ষিয়ান নেতা মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিনের নেতৃত্বে সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, যুব আন্দোলনের সভাপতি কেএম আতিকুর রহমান, শ্রমিক নেতা হারুনুর রশীদ সহ স্থানীয় ছাত্র, যুব আন্দোলন ও ইসলামী আন্দোলনের নেতারা ত্রাণ বিতরণ করছিলেন। তাঁরা উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন পয়েন্টে পরিকল্পনা মাফিক দূর্গতদের মাঝে নগদ অর্থ, খাবার ও জরুরী সামগ্রী বিতরণ করেন।
হৃদরোগের জটিলতা নিয়ে হেমায়েত সাহেবের পক্ষে বেশীদিন এমন কঠিন মেহনত করা সম্ভব না হওয়ায় ঢাকায় ফিরে আসেন তিনি। কেএম আতিকও ফিরে আসেন কেন্দ্রীয় কর্মসুচি পালনের আঞ্জাম দিতে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে কেন্দ্র থেকে রোহিঙ্গাদের নিকট চলে আসেন দলের কেন্দ্রীয় সদস্য, মুফতী দেলোয়ার হোসেন সাকী, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক জান্নাতুল ইসলাম, ছাত্র আন্দোলনের শরিফুল ইসলাম ও কাওসার আহমেদ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশে পেয়ে উদ্দীপনায় মত্ত হয়ে স্থানীয় নেতা কর্মীরা রোহিঙ্গাদের খেদমতে নিজেদেরকে উজাড় করে দিচ্ছেন। নগদ অর্থ, খাবার ও জরুরী দ্রব্যাদির পাশাপাশি জীবন রক্ষাকারী ঔষধও প্রদান করা হচ্ছে। বিশুদ্ধ পানির জন্য গভীর নলকূপ স্থাপন করেছেন তাঁরা।
সবচেয়ে আকর্ষণীয় ইভেন্ট ছিলো গত পরশু (সোমবার)। ইসলামী আন্দোলনের শীর্ষ নেতৃত্বের একজন, যুগের রাহবার খ্যাত সিনিয়র নায়েবে আমীর, মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়েজুল করীমের সরব উপস্থিতি। রোহিঙ্গা বন্ধুদের মাঝে তিনি দিনভর নিজ হাতে বর্ণিত ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন। এ সময় কান্নারত রোহিঙ্গাদের শান্তনা দিতে গিয়ে তিনিও অশ্রুসিক্ত হন।
পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “রোহিঙ্গাদের এখন মাথা গোঁজার ঠাই নেই, খাবার নেই , গায়ে কাঁদামাখা মলিন মুখগুলো দেখা বড়ই কষ্টের, সহ্য করার মতো নয়। আমরা ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা সাধ্যমতো ত্রাণ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছি।”
এদিকে, তিনি ১৩ তারিখ বুধবারের ঘোষিত মায়ানমার দূতাবাস ঘেরাওয়ের কর্মসূচিতে যোগ দেয়ার জন্য দেশবাসীকে আহবান জানান। তিনি চট্টগ্রাম অঞ্চলে রাতে মাহফিলের কর্মসূচিও সমানে চালিয়ে যাচ্ছেন। গত রাতেও তিনি একাধিক মাহফিলে বয়ান করেছেন।
মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়েজুল করীম সাহেব আজ (বুধবার) সকালে মায়ানমার দূতাবাস ঘেরাওয়ের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে বিমানযোগে ঢাকায় আসবেন। বিকালে ফিরতি বিমানে চট্টগ্রামে পৌঁছে যথারীতি নির্ধারিত মাহফিলে যোগ দিয়ে বয়ান করবেন ইনশাআল্লাহ।
একজন দ্বীনের দাঈ ও নিজ তরীকার খলিফা হিসেবে ২৪ ঘন্টাই অক্লান্ত পরিশ্রম করে তিনি আজ চরমোনাই তরিকা ও ইসলামী আন্দোলনকে এ দেশের শ্রেষ্ঠ দ্বীনী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে সহায়তা করেছেন, আলহামদুলিল্লাহ্।
কাল পীর সাহেব চরমোনাই সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম সাহেব পবিত্র হজ্ব থেকে ফিরেছেন। আজ তিনি মায়ানমার দূতাবাস ঘেরাওয়ের কর্মসূচি পরিচালনা করবেন।
পরে তিনিও ত্রাণ বিতরণের লক্ষ্যে সরাসরি হাজির হবেন অসহায় মুসলিম কমিউনিটিতে।ইনশাআল্লাহ্।
বিশিষ্ট লেখক ও কলামিস্ট
Leave a Reply