গতকাল (রবিবার) একজন ইতালি প্রবাসী ও ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের একজন পরম হিতাকাংখী জনাব পলাশ রহমান সাহেব ইশা ছাত্র আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সম্মেলন উপলক্ষে খুলনা জেলা উত্তর ও দক্ষিণে পৃথক পৃথক অনুষ্ঠিত দুটি প্রোগ্রাম নিয়ে নির্দিষ্ট কয়েকটি গ্রুপে একটি পোস্ট দেন। পরবর্তীতে সেই পোস্ট একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে “খুলনার মাটি ফেতনার ঘাটি” শিরোনামে পাবলিশ হলে এ নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। শুরু হয় বিতর্কের ঝড়। সুযোগ বুঝে ইশা ছাত্র আন্দোলনের দিকে সমালোচনার তীর ছুড়তে শুরু করে নিন্দুকেরা। পরিবেশ যখন বেশ উত্তপ্ত তখন এ নিয়ে মুখ খুলেন ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শাইখ ফজলুল করীম মারুফ। গণমাধ্যমে প্রেরিত তার বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
গত বছর ২৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী সম্মেলন কেন্দ্রীয়ভাবে আয়োজন করা হয়েছিলো। জেলা ও শাখাগুলোতে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আয়োজনের চাহিদা থাকলেও গত বছর কোথাও আলাদা করে অনুমতি দেয়া হয়নি। এই বছর ২৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনে আমরা প্রতিটা শাখাকে আলাদা আলাদা করে আয়োজন করার কথা বলেছি। এমনকি প্রতিটা থানা শাখাকেও আলাদা করে আয়োজন করতে উৎসাহিত করা হয়েছে। এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে আলহামদুলিল্লাহ আমাদের প্রতিটা জেলা শাখাই আলাদা আলাদা করে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানমালা আয়োজন করেছে।
গত শুক্রবার আমি চট্টগ্রাম মহানগরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আয়োজনে ছিলাম। একই দিনে চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিন জেলাতে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আয়োজন হয়েছে। চরমোনাই আলিয়া ও কওমী শাখা একই ক্যাম্পাসে আলাদা করে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আয়োজন করেছে। এভাবে দেশের প্রতিটা শাখাই ভিন্ন ভিন্ন ভাবে করেছে। এই ভিন্ন ভিন্ন আয়োজনে শাখাগুলোর মাঝে পরস্পর সুস্থ প্রতিযোগিতা ছিলো। কাদের আয়োজন সুন্দর হয়, কাদের আয়োজনে উপস্থিতি বেশী হয় ইত্যাদি নিয়ে মধুর প্রতিযোগিতা ছিলো।
খুলনার আয়োজন এই নির্দেশনার বাস্তবায়ন ছিলো। এবং তাদের মাঝে এই সুস্থ প্রতিযোগিতাও ছিলো। পাশাপাশি দুই শাখার সভাপতি আমার কাছে এসেই যার যার আয়োজনের শ্রেষ্ঠত্বের দাবী করছিলো। ছবি দেখিয়ে আমাকে বিচারক মানছিলো! আমি দুইজনকেই বুকে জড়িয়ে প্রত্যেকের শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি দিয়েছি। তখন তাদের মাঝে যে আনন্দ আর উদ্দিপনা দেখেছি তা বিপ্লবের আশা জাগায়। এখন এই ভিন্ন ভিন্ন আয়োজন, এই প্রতিযোগিতা, উর্ধতন নেতৃত্বের কাছে এই মধুর দাবী করাকে কেউ যদি বিভেদ হিসেবে দেখে তাহলে তার জন্য আমাদের দোয়া করা ছাড়া আর কি-ই বা করার থাকে!! রাসুল সঃ কে একবার আবু জেহেল বলেছিলো, “মুহাম্মাদ! তোমার মতো কুৎসিত কাউকে আমি দেখি নাই।”
রাসুল সঃ বললেন, “আপনি সঠিক বলেছেন”।
খানিক পরে আবু বকর রাঃ এসে রসুল সঃ কে বললেন, “হে আল্লাহর রাসুল সঃ! আমি আপনার চেয়ে সুন্দর কাউকে দেখি নাই।” রসুল সঃ বললেন, “তুমি সঠিকই বলেছে”। তখন সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, ” ইয়া রাসুল আল্লাহ! আপনি উভয়কেই সঠিক বললেন?” রাসুল সঃ জবাব দিয়েছিলেন, “যার মনের অবস্থা যেমন, আমাকে সে তেমনই দেখে”।
অতএব ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন এর ভিন্ন ভিন্ন আয়োজন কারো কারো কাছে “বিভেদ” বা “ফেৎনা” মনে হতে পারে। এতে অবাক হওয়ার কিছু নাই। তবে সত্যান্বেষীদের জন্য আমি শেখ ফজলুল করীম মারুফ (কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি, ইশা ছাত্র আন্দোলন) পুর্ণ দ্বায়িত্ব নিয়েই বলছি, খুলনার ভিন্ন আয়োজন “ফেতনা” বা “বিভেদ” না। এই ভিন্ন আয়োজন আমাদের কেন্দ্রীয় নির্দেশনার বাস্তবায়ন ছিলো।
এর পরেও কারো কাছে যদি ইতালি প্রবাসীর কথাকে বেশী বাস্তবানুগ মনে হয় তাহলে তিনি আমাদের মাঝে “বিভেদ” আন্দাজ করে বিকৃত সুখ পেতে থাকুন। আমরা আমাদের কাজ করতে থাকি।
আমরা মহান আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের আশা রাখি।
“ইনকেলাব, জিন্দাবাদ”
“নিন্দুকেরা হেদায়েত পাক”
লেখক-
কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি
Leave a Reply