আইএবি নিউজ : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেছেন, রাসূল সা. মানবকল্যাণ ও দেশ উন্নয়নের যে রাজনীতির সূচনা করেছিলেন মুসলমানরা সে রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাওয়ার ফলে চরম বিপর্যয়ে নিপতিত হয়েছে। ভুলে গেছে তাদের প্রকৃত পরিচয়। আর এ সুযোগে সুবিধাবাদী ও কায়েমী স্বার্থবাদী অনৈসলামী রাজনীতির ব্যাপক প্রচলনের ফলে তথাকথিত রাজনৈতিক নেতারা হাজার হাজার কোটি টাকার অবৈধ অর্থের পাহার গড়ে দেশকে কলঙ্কিত করেছে ।
বৃহস্পতিবার (২৫ মমে’১৭) ইসলামী কৃষক-মজুর আন্দোলন এর কেন্দ্রীয় পূর্ণঙ্গ আহবায়ক কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা উপলক্ষে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। সংগঠনের কেন্দ্রীয় আহবায়ক মুফতী ড. মাহবুবুর রহমান এর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব শহিদুল ইসলাম কবির এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক হাফেজ মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দীন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুহাম্মদ হারুনুর রশীদ ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা ছিদ্দিকুর রহমান কোরায়শী প্রমূখ।
অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন আরও বলেন, অবৈধ অর্থের সয়লাবে কিছু মানুষ যে লম্পট আর চরিত্রহীন দলে পরিণত হয়ে তাদের শৃগাল কুকুরের মতো অভ্যাস হয়ে গেছে সে চিত্র ইতোমধ্যে দেশবাসীর সামনে ফুটে উঠেছে। এ সকল পরিবারকে মানুষের পরিবার বলা যেতে পারে না। মুখোশধারী দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক কিছু সংখ্যক নেতা ও তথাকথিত দুর্নীতিবাজ ধনীদের কারণে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট লাখো শহীদের রক্তে কেনা বাংলাদেশ আজ কলঙ্কিত। স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরে দেশের সাধারণ মানুষ ওই সকল অর্থলিপ্সু রাজনীতিবিদদেরকে কলঙ্কিত ব্যক্তি হিসেবে মনে করে। মানুষ তাদেরকে জাতীয় চোর-ডাকাত বলে সম্ভোধন করে। ক্ষেত্র বিশেষে মন্ত্রী, এমপি, রাজনৈতিক নেতাদেরকে আগের মত সম্মান ও শ্রদ্ধা করতে চায় না। তিনি রাজনীতির কলঙ্ক মোচন করে রাসূল সা. এর শুরু করা পবিত্র ও কল্যানধর্মী রাজনীতির মাধ্যমে দেশের কৃষক-মজুর, জেলে, তাতীসহ সর্বস্থরের মানুষদেরকে সংগঠিত করতে ইসলামী কৃষক-মজুর আন্দোলন এর মনোনীত দায়িত্বশীলদের প্রতি আহবান জানান।
অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দীন বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দেশে একটি অর্থবহ পরিবর্তন চায়। যে পরিবর্তনের মাধ্যমে মানুষ তার অধিকার পাবে, সম্মানজনক জীবন এবং জীবিকা পাবে, জাতীয় ঐক্য এবং সংহতির পরিবেশ সৃষ্টি হবে, মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব এবং বন্ধুত্ব সৃষ্টি হবে, সমাজের সর্বস্তরে মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় হবে এটাই আমাদের আকাঙ্খা।
তিনি বলেন, আমরা চাই গণমানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে। জন্মগতভাবে মানুষকে আল্লাহর দেয়া বাঁচার অধিকার, মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে সার্থক সফল এবং সম্মানজনক জীবন জাপনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে।
তিনি বলেন, বর্তমান বাস্তবতায় মানুষ সব সময় ভয়ভীতি এবং আতঙ্কের মধ্যে কালাতিপাত করছে। মানুষের মধ্যে উদ্বেগ এবং উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। কার কখন কোথায় জীবন অথবা ইজ্জত চলে যায়, কখন কোথায় সম্পদ লুন্ঠন হয়ে যায় তা বলা মুশকিল। এই অবস্থার গুনগত পরিবর্তনের জন্য আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধিদের বৃহত্তর গণ ঐক্যের জন্য ইসলামী কৃষক-মজুর আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমার বিশ্বাস।
সভায় মুফতী ড. মাহবুবুর রহমানকে আহবায়ক ও শহিদুল ইসলাম কবিরকে সদস্য সচিব করে ইসলামী কৃষক-মজুর আন্দোলন এর ২৫ সদস্য বিশিষ্ট প্রথম কেন্দ্রীয় আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করেন।
Leave a Reply