স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশে নৈতিক অবক্ষয়ের মূল কারণ ও তার প্রতিকার সম্পর্কে বিশ্লেষণ করতে গেলে দেখা যায় আমাদের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের নৈতিক শিক্ষার চরম অভাব রয়েছে। নৈতিক শিক্ষার শুরু হওয়া উচিৎ পরিবার এবং একেবারে প্রাইমারী লেভেল থেকে। কিন্তু আমাদের শিক্ষা কারিকুলাম ও শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ এমন অবস্থায় রয়েছে যে, এর আমূল সংস্কার ব্যতীত নৈতিকতার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়।
জাতীয় শিক্ষক ফোরাম ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে আয়োজিত “শিক্ষাক্ষেত্রে নৈতিক অবক্ষয়: কারণ ও প্রতিকার” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় আহবায়ক অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান উপর্যুক্ত কথা বলেন।
গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় রাজধানী উত্তরার হোটেল মিলিনাতে অধ্যাপক ইউনুছ আলী সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব প্রভাষক আব্দুস সবুরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগর উত্তরের আহবায়ক মুফতী মাছউদুর রহমান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডেপুটি কন্ট্রোলার ড. মীর মনযুর মাহমুদ, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের রেজিষ্টার ড. শাহ আলম, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির লেকচারার, শিক্ষাবিদ ও কলামিষ্ট শাহেদ হারুন, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আব্দুল্লাহ আল মাসউদ, বিজিএম ইএ ইউনিভার্সিটির লেকচারার মুহা. মিজানুর রহমান, মাসিক সংস্কারের সম্পাদক ও গবেষক ড. ইসমাঈল, এসিসস্ট্যান্ট প্রফেসর ড. মহিব্বুল্লাহ, উত্তরা মডেল কলেজের প্রিন্সিপাল শরীফ উদ্দিন, প্রিন্সিপাল সৈয়দ মুহা. নূর হোসেন প্রমুখ। এছাড়াও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, আইনবিদ, সমাজসেবক ও সূধীজন উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষাবিদগণ তাদের বক্তব্যে বলেন, নৈতিকতার মানোন্নয়ন ব্যতীত সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে সন্ত্রাস, দূর্নীতি-দুঃশাসন ও অন্যান্য দুষ্কর্ম দূর করা সম্ভব নয়। যারা শিক্ষার ঝুলি মাথায় নিয়ে সার্টিফিকেটধারী খেতাবে ভূষিত হয়ে অফিস আদালতে চেয়ার-টেবিলে বসে ফাইল আটকিয়ে অর্থনৈতিক শোষণ, শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, অফিসে দূর্নীতি, নিরাপত্তা ও রাজনীতিতে অস্বস্তি সৃষ্টি করছে, তারা বিদেশেও আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে চলছে। মাত্র ৫% দূর্নীতিবাজের জন্য ৯৫% মানুষকে এর প্রায়শ্চিত্ত ভোগ ও দূর্ণাম পোহাতে হচ্ছে। রিকশাওয়লাা, ভ্যানচালক, ফেরিওয়ালা, জুতার মুচি, নাপিতরা দূর্ণীতি করেনা। বাসার বউ বাচ্ছাদের জন্য দামি দামি গিফট নেয় না। দূর্নীতি করে তারাই যারা মূল্যবোধের বিপরীতে অনৈতিকতার চূড়ান্ত শিখরে উপণীত। তবে আশার আলো এই যে, এদেশের ৮৫-৯০% মানুষ আল্লাহর প্রতি আস্থা ও পরকালীন জীবনের প্রতি বিশ্বাস রাখে। এ কারণে সহজেই এ সমস্যা উতরানো সম্ভব। শুধু প্রয়োজন সঠিক ইচ্ছার, যথার্থ পরিকল্পনা ও ইসলামভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থার। পারিপার্শি¦ক পরিবেশ, সমাজ, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির আত্মশুদ্ধি সবকিছুর জন্যই নৈতিক শিক্ষা প্রয়োজন। একমাত্র ইসলামই হতে পারে উৎকর্ষিত নৈতিকতার মানদন্ড।
শিক্ষাবিদগণ আরো বলেন, যুব সমাজ বা তরুণ প্রজন্মকে নৈতিক পদস্খলন থেকে রক্ষা ও তাদের চরিত্র গঠন করার লক্ষ্যে সকল পাবলিক ও প্রাইভেট স্কুল, কলেজ, ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য “নৈতিকতা ও মূল্যবোধ” বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে কম্পোলসারী সাবজেক্ট হিসেবে পাঠ্যসূচীতে অন্তর্ভূক্ত করা এবং তার পাঠদানের জন্য উপযুক্ত শিক্ষক নিয়োগ করা।
Leave a Reply