রিয়াদ, বরিশাল প্রতিনিধি : রোহিঙ্গা মুসলমানরা নাকি মায়ানমারের নাগরিক নয়, তারা নাকি বাংলাদেশের নাগরিক। আর যদি তাই হয় তবে মায়ানমারের আরাকান রাজ্য বাংলাদেশের। আর বাংলাদেশের ভুখন্ড ফিরিয়ে আনতে সকলকে প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মাওলানা মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই)।
ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের ২৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে পাঁচটায় অশ্বীনি কুমার টাউনহলে আয়োজিত ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের ২৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মায়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের নিষ্ঠুরভাবে হত্যা, ধর্ষণ করে হোলি খেলায় মেতেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। কিন্তু এত অত্যাচার হওয়া সত্বেও টনক নড়ায়নি জাতিসংঘ। তিনি জাতিসংঘকে মুসলমান নিধনসংঘ বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার প্রথম দিকে অনেক রোহিঙ্গাকে ফেরৎ পাঠিয়েছে। যদি রোহিঙ্গাদের তিনি ভরণ পোষণ আর খাবার না দিতে পারেন তবে আমাদের হাতে ছেড়ে দিন। আমরা রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব নেব।
পীর সাহেব চরমোনাই চালসহ দ্রব্যমূল্যের আকাশচুম্বি মূল্যবৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মাত্র ২ দিনের ব্যবধানে কেজি প্রতি চালের দাম ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে বলে সংবাদ মাধ্যম থেকে জানান যায়। যা রীতিমত দেশবাসীর উদ্বেগের কারণ। সরকারের মদদে কতিপয় আড়ৎদার সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়িয়ে জনজীবন চরম দুর্বিষহ করে তুলেছে। প্রতিকেজি চালের দাম ৭০/৭২ টাকা ধরে বিক্রি হচ্ছে, অপরদিকে মোটা চালের দামও ৫০/৫৫ টাকা কেজি। যা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। রাজধানী ঢাকার কয়েকটি পাইকারি ও খুচরা বাজারের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সংবাদ মাধ্যমে জানা যায়। একই মানের চালের দাম একেক বাজারে একেক রকম। পাইকারি বাজারের সাথে খুচরা বাজারের সামঞ্জস্য নেই। মিল নেই এক দোকানের সাথে পাশের দোকানের। যে যার মতো করে দাম হাঁকছেন। ইচ্ছে মতো ক্রেতার গলা কাটছেন। কৃষি প্রধান বাংলাদেশে যদি হয় এই অবস্থা তাহলে সাধারণ মানুষের কি অবস্থা হবে।
তিনি বলেন, কক্সবাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী এলাকার খবর আরো ভয়াবহ। সেখানে চাল, ডাল ও আলুর দাম ৩গুন থেকে ৪গুন বৃদ্ধি বিক্রয় করা হচ্ছে। যা কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না। চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে হবে এবং এ সকল সিন্ডিকেটের সাথে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে কোন মন্ত্রী এমপি জড়িত কিনা তাও খতিয়ে দেখতে হবে।
পীর সাহেব চরমোনাই তরুণদের উদ্দেশ্যে বলেন, আগামী দিনে তোমরা দেশ পরিচালনা করবে। তোমাদেরকে হতে হবে সৎ ও বহু গুণের অধিকারী। দেশের সকল সমস্যা সমাধানে তোমরাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। দেশের উন্নয়নে তোমাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে।
ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন বরিশাল জেলা ও মহানগর এর আয়োজনে ও ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি কে এম শরীয়াতুল্লাহর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মুফতী সৈয়দ এছহাক মুহাম্মদ আবুল খায়ের, বরিশাল মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা জাকারিয়া হামিদী, বরিশাল জেলার সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ আবুল খায়ের, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি জি.এম. রুহুল আমীন।
সম্মেলনে বক্তারা আরও বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম গণতহ্যায় অং সান সূচি’র বিচারের জন্য গোটা মুসলিম বিশ্ব তাকিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশ সরকারকে রোহিঙ্গা মুসলমাদের বিষয়ে মুসলিম বিশ্ব সমুহের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। আর এর জন্য আন্দোলনের কোন বিকল্প নেই। আর একমাত্র জোড়ালো আন্দোলনের নেতৃত্বে সামনে থেকে কাজ করে যাবে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন।
Leave a Reply